রবিবার ১৯ মে ২০২৪
Online Edition

দরপতনে খুলনাঞ্চলের আধা নিবিড় পদ্ধতির বাগদা চাষ ক্ষতির সম্মুখীন

খুলনা ব্যুরো : খুলনা জেলার কয়রায় আধা নিবিড় পদ্ধতিতে বাগদা চাষে স্বাবলম্বী হয়েছেন ‘মীম হ্যাচারী এন্ড কালচার’র এর স্বত্বাধিকারী মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের সাতহালিয়া গ্রামের মো. তৈয়েবুর রহমান। তিনি বিগত ৩ বছর এ পদ্ধতিতে এক একর জমিতে বাগদা চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছিলেন। তবে এ বছর বাগদার দরপতনে কিছুটা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

মৎস্য চাষি মো. তৈয়েবুর রহমান বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে মাছ চাষ করি। ভাইরাস মুক্ত স্পেসিফিক প্যাথোজেন্ট ফ্রি (এসপিএফ) পোনা ও আধা নিবিড় পদ্ধতিতে চাষাবাদের কথা জানতে পেরে চাষের সিদ্ধান্ত নেই। এমকে হ্যাচারি আমাকে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করে। উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে পরামর্শ পেয়েছি। ২০১৯ সালে ৩ বিঘা জমি প্রকল্পের উপযোগী করে চাষ শুরু করি। ৩বছর ভালো মুনাফা পেয়েছি। তবে এ বছর একটু সমস্যা হয়েছে।

তিনি বলেন, এ বছরের জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে জলাশয় প্রস্তুত করে ৫০ হাজার এসপিএফ পোনা দেই। নিয়মানুযায়ী অক্টোবর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে বাগদা ধরার কথা থাকলেও দরপতনের কারণে একমাস দেরি করি। মনে করেছিলাম দাম স্বাভাবিক হবে। তবে এক মাস দেরির ফলে আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। একদিকে উৎপাদন খরচ বেড়েছে, অন্যদিকে বেশ কিছু বাগদা মারা গেছে। যেখানে ২ হাজার কেজি উৎপাদন হওয়ার কথা সেখানে ১৩ শত ১৩ কেজি বাগদা পেয়েছি। ১৮/১৯ পিস বাগদায় এক কেজি হয়েছে। প্রতি কেজি বাগদার দাম পেয়েছি ৭২০ টাকা। মোট ৯ লাখ ৪৫ হাজার ৩৬০ টাকা বিক্রি হয়েছে। আর খরচ হয়েছে প্রায় ১০ লাখ টাকা। আকস্মিক দরপতনের কারণে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তবে অন্যান্য বছর ভালো লাভ পেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আধা নিবিড় পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ অনেক লাভজনক। তবে বিদেশে চিংড়ির চাহিদা কমে যাওয়ায় কোম্পানিগুলো দর কমিয়েছে। আর আমাদের ঝুঁকি বেড়েছে। এ পদ্ধতিতে স্বল্প জায়গায় অধিক মাছ চাষ করা যায়।

তিনি জানান, অক্সিজেন সরবরাহ ঠিক রাখতে জলাশয়ে চারটি বৈদ্যুতিক মোটর বসানো হয়। বায়ো সিকিউরিটির জন্য ঘেরের পাড় নেট দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। জলাশয় ৬ ফুট গভীরতা ও পাড় মজবুত করতে হয়েছে।

কয়রা মেরিন ফিসারিজ কর্মকর্তা বিদ্যুৎ বিশ্বাস বলেন, কয়রা উপজেলায় আধা নিবিড় পদ্ধতিতে ৮ জন চাষি বাগদা উৎপাদন করছেন। মৎস্য দপ্তর থেকে তাদেরকে সকল প্রকার পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। আধা-নিবিড় পদ্ধতির চিংড়ি চাষ অনেক লাভজনক। তৈয়েবুর রহমান অত্যন্ত দক্ষ একজন চিংড়ি চাষি। তবে বৈশ্বিক মন্দায় দরপতনের ফলে তিনি কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কেউ চাষ করতে আগ্রহী হলে আমরা পরামর্শ দেওয়ার জন্য সর্বদা প্রস্তুত রয়েছি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ